রাজশাহীর সেরা দর্শনীয় স্থানসমূহ - রাজশাহীকে কেন শান্তির নগরী বলা হয়?

আজকে আমাদের আলোচ্য বিষয়ে রাজশাহীর সেরা দর্শনের স্থানসমূহ নিয়ে। রাজশাহী শহরটি পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন শহর। রাজশাহী শহর সাধারণত স্বচ্ছতার জন্য, আমির জন্য এবং রেশমের জন্য পুরো বাংলাদেশে প্রসিদ্ধ শহর। বর্তমানে রাজশাহী শহর আলোর শহর বলে পরিচিত। রাজশাহী শহরের সৌন্দর্য বর্ধন করছে রাজশাহীর বিভিন্ন রাস্তার আলোক বাতি। রাজশাহী বিভিন্ন ‌ ধরনের দুর্নীতি এবং রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা মুক্ত শহর বলে রাজশাহীকে শান্তির শহর বলা হয়।
রাজশাহীর সেরা দর্শনীয় স্থানসমূহ - রাজশাহীকে কেন শান্তির নগরী বলা হয়
বাংলাদেশের মধ্যে অন্যতম সুন্দর একটি শহর হচ্ছে রাজশাহী। রাজশাহী শহর অন্যান্য শহরের তুলনায় অনেক পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন বলে পরিচিত। রাতের পর রাজশাহীর সৌন্দর্যতা ‌ আরো বহু গুণে বেড়ে যায়।

রাজশাহীর সেরা দর্শনীয় স্থানসমূহ

রাজশাহী শহরে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভ্রমণ স্থান। বাঘা মসজিদ, পুঠিয়া রাজবাড়ী, পদ্মা নদীর পাড়, বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, কামরুজ্জামান স্টেডিয়াম, পদ্মা গার্ডেন, জিয়া পার্ক, চিড়িয়াখানা‌ এবং রাজশাহী কলেজ এ সকল স্থান রাজশাহীর সেরা দর্শনীয় স্থানসমূহ। এ সকল স্থানে প্রতিনিয়ত দর্শনার্থীর আনাগোনা দেখা যায়। এ সকল স্থান বিনোদন এবং সৌন্দর্যে ভরপুর। আজকে আমরা এ সকল স্থান সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।

রাজশাহী কেন্দ্রীয় চিড়িয়াখানা

রাজশাহীর সেরা দর্শনীয় স্থানসমূহের মধ্যে সর্বপ্রথমে নাম আসে রাজশাহী কেন্দ্রীয় চিড়িয়াখানার।পদ্মা নদীর তীর ঘেঁষে একটি বিনোদন কেন্দ্র ও মনোরম পরিবেশ হচ্ছে রাজশাহী কেন্দ্রীয় চিড়িয়াখানা। রাজশাহী শহর থেকে এই চিড়িয়াখানার দূরত্ব মাত্র ৪.২ কিলোমিটার। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং মনোরম পরিবেশে ভরপুর এই জায়গা। ভিতরে ঢুকতে আপনি জিরাফের একটি বড় ভাস্কর্য দেখতে পাবেন। তাছাড়া বিভিন্ন জায়গা জুড়ে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্য ও সুন্দর ছোট ছোট লেক। চিড়িয়াখানায় রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পশু পাখি। হরিণ, ঘোড়া, অজগর সাপ, বালি হাঁস, কুমির ও বিভিন্ন রকমের পাখি। তাছাড়া আরও রয়েছে লেকের ভেতরে বিভিন্ন রঙের বিদেশি মাছ। ছোটদের জন্য রয়েছে অনেক ধরনের রাইট। রাজশাহীর সবচেয়ে বড় নাগরদোলা রয়েছে রাজশাহী কেন্দ্রীয় চিড়িয়াখানা তে। এই নাগরদোলা থেকে সম্পূর্ণ রাজশাহী শহর এমনকি পদ্মার পাড় ও চড় দেখা যায়। তাছাড়াও দর্শনার্থীদের মনোরঞ্জনের জন্য রয়েছে প্যাডেল বোর্ড, ছোট বাচ্চাদের জন্য রয়েছে ঘোড়ার রাইড, হাঁসের রাই। প্রতিদিনই চিড়িয়াখানাতে দর্শনার্থীদের ভিড় লেগেই থাকে। 

বর্তমানে চিড়িয়াখানার উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। চিড়িয়াখানা সাধারণত সকাল দশটা হতে মাগরিবের আজান পর্যন্ত খোলা থাকে। জন প্রতি পঁচিশ টাকার টিকিট পরিশোধ করে এখানে যে কেউ দর্শনার্থী প্রবেশ করতে পারবে ‌। পিকনিক স্পট এর জন্য চিড়িয়াখানা ভাড়া নিতে চাইলে আলাদাভাবে ফি প্রদান করা লাগবে। আপনি যদি রেলপথের রাজশাহী শহরে আসেন, তাহলে স্টেশন থেকে রিকশায় ৪০ টাকা ভাড়াতে চিড়িয়াখানায় চলে আসতে পারবেন। অটো ব্যবহার করে রিয়েল অটো ব্যবহার করে রেল স্টেশন থেকে চিড়িয়াখানা আস্তে মাত্র জন প্রতি২৫ টাকা ভাড়া লাগবে। রাজশাহী শহরে থাকার জন্য বিভিন্ন ধরনের হোটেল। তার মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য হোটেল হল: হোটেল নাইস ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল গ্রিন সিটি ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল স্টার ইন্টার্নেশনাল।

মুক্তমঞ্চ পদ্মার পাড়

রাজশাহী শহরের অত্যন্ত সৌন্দর্য বর্ধিত একটি স্থান হল মুক্তমঞ্চ। প্রতিদিন বিকালে এবং রাতে প্রচুর মানুষ এখানে আড্ডা দেয়। এখানে বিভিন্ন ধরনের কনসার্টের আয়োজন করা হয়। মুক্ত মঞ্চ রয়েছে বহু ধরনের মুখরোচক খাবারের স্টল এবং ফাস্টফুডের স্টল। মুক্ত মঞ্চ থেকে একটু সামনে গেলে পদ্মা নদীর পাড় দেখা যায়। বহুদর্শনার্থী প্রতিদিন এই স্থানে সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য ভিড় করে থাকে। বছরের ৩৬৫ দিন এই জায়গায় জনবল সমাগম হয়। সকলে নদীর ধারে বসে বাতাস খায় এবং আড্ডা দেয়। রাত হলে এই আড্ডা আরো জমজমাট হয়ে ওঠে। মুক্তমঞ্চ রাজশাহী শহর থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এই মুক্তমঞ্চের আশেপাশে রয়েছে সীমান্ত নোঙ্গর ও সীমান্ত অবকাশ। এ সকল স্থানে আপনি বিভিন্ন ধরনের খাবার ও বসার সুন্দর ব্যবস্থা পাবেন।

বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর

রাজশাহীর সেরা দর্শনীয় স্থানসমূহের মধ্যে অন্যতম হলো বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর।রাজশাহী শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর। এটি বাংলাদেশের প্রথম জাদুঘর। সকল প্রত্নতত্ত্ব সংগ্রহের তালিকায় এশিয়ার মধ্যে অন্যতম জাদুঘর হলো বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর। ১৯১০ সালের দিকে নাটোরের জমিদার শরৎকুমার রায়, আইনজীবী অক্ষয় কুমার মৈত্র এবং রাজশাহী কলেজের স্কুলের শিক্ষক রামপ্রসাদ চন্দ্র এই বরেন্দ্র জাদুঘর গঠন করে বিভিন্ন স্থান থেকে ৩২ টির মত দুষ্প্রাপ্ন নিদর্শন সংগ্রহ করে নিয়ে আসেন। ১৯৬৪ সালের দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরটির অধিগ্রহণ করে নাই। অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ বরেন্দ্র জাদুঘর পরিদর্শন করেছেন। মহাত্মা গান্ধী ,নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু তাদের মধ্যে অন্যতম। 

বরেন্দ্র জাদুঘরে প্রায় নয় হাজারেরও বেশি নিদর্শন বিদ্যমান রয়েছে। এখানে রয়েছে সিন্ধু সভ্যতা নিদর্শন সহ মহেঞ্জোদারো সভ্যতার প্রত্নতন্ত্র। তাছাড়া আরো রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পাথরের মূর্তি, বদ্ধ মূর্তি, ভৈরবের মাথা, গঙ্গা মূর্তি, মোগল আমলের রৌপ্য মুদ্রা এবং সম্রাট চন্দ্র গুপ্তের স্বর্ণ মুদ্রা ও শাহজালালের রৌপ্য মুদ্রা।

পুঠিয়ার রাজবাড়ি

রাজশাহী শহর থেকে প্রায় ৩১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ফুটিয়া রাজবাড়ী। পুঠিয়া রাজবাড়িতে রয়েছে অনেকগুলো কক্ষ এবং এটি সাধারণ মহল। পূর্বের জমিদার ও রাজারা এখান থেকে তাদের কাজকর্ম পরিচালনা করতেন। ১৮৯৫ সালে মহারানী হেমন্ত কুমারী দেবী ইন্দো-ইউরোপীয় স্থাপত্য রীতিতে পুঠিয়া রাজবাড়ী নির্মাণ করেন। এই রাজবাড়ীতে রয়েছে গোবিন্দ মন্দির। এই মন্দিরটির দেওয়াল এ অসংখ্য দেব-দেবী, যুদ্ধের সাজ সজ্জা, ফুল ইত্যাদি পোড়া মাটির ফলক দ্বারা খুব সুন্দর ভাবে সজ্জিত করা রয়েছে। পুঠিয়া রাজবাড়ী থেকে কিছু দূরেই রয়েছে বড় শিব মন্দির। এই মন্দিরটি নির্মিত হয় ১৮২৩ সালে। ভুবনময়ী দেবী এই মন্দিরটি নির্মাণ করেন। এই মন্দিরটির উত্তর পাশের দিঘিতে নামার জন্য ঘাট বাঁধানো আছে। চারপাশে চারটি কোণ এবং কেন্দ্রস্থলে একটি চূড়া বিদ্যমান রয়েছে।

রাজবাড়ী থেকে কিছু দূর প্রায় আনুমানিক ৫০০ মিটার দক্ষিণে রয়েছে হাওয়াখানা। এ হাওয়াখানাটি দ্বিতল ইমারত। এই ইমারতের দক্ষিণ পাশে উপরে ওঠার জন্য একটি সিঁড়ি রয়েছে। পুঠিয়া রাজবাড়ীর সদস্যরা রাজবাড়ী থেকে রথ বা হাতিতে করে অথবা নৌকায় চড়ে এখানে খোলা হাওয়া বা বাতাস উপভোগ করার জন্য আসতেন বলে জানা যায়। পুঠিয়া রাজবাড়ির নিচের তলায় ১২ এবং উপরের তলায় ১৫ টি কক্ষ রয়েছে। ভবনের সামনের দিকেই স্তম্ভ কাঠের কাজ এবং প্রতিটা দরজায় বিভিন্ন নকশা এবং ডিজাইন অনেক সুন্দর ভাবে করা রয়েছে। ইন্দো ইউরোপীয় স্থাপন রীতিতে জোড়া থাম ও ঝুল বারান্দা রয়েছে এই পুঠিয়া রাজ বাড়িতে। দর্শনার্থীদের জন্য এটি একটি বিশেষ স্থান।

বাঘা মসজিদ

রাজশাহী শহর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে ঐতিহাসিক বাঘা মসজিদ। ইট দিয়ে তৈরি এই মসজিদে মোট দশটি গম্বুজ রয়েছে। এই মসজিদে বিভিন্ন পোড়া মাটির ফলক দেখতে পাওয়া যায়। মসজিদের বাইরেই চার কোনায় অস্টা পূজা আকৃতির বুড়োদ গুলো খুবই সৌন্দর্যপূর্ণ এবং বৈশিষ্ট্য পূর্ণ। ১৯৮৭ সালের ভূমিকম্পের সময় এই মসজিদে ছাদের কিছু অংশ ধ্বংস হয়ে যায়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ সেই অংশটুকু পুনর্নির্মাণ করেন। অনেক দর্শনার্থী বাঘা মসজিদ দেখার জন্য ভিড় করে থাকেন। এটি রাজশাহীর সেরা দর্শনের স্থান সমূহের মধ্যে অন্যতম একটি স্থান হিসেবে গণ্য করা হয়।

শহীদ জিয়া শিশু পার্ক

রাজশাহী জেলার নওদাপাড়ায় অবস্থিত শিশু পার্ক একটি অত্যন্ত সুন্দর বিনোদন কেন্দ্র। এখানে ছোট থেকে বড় সকল বয়সীদের জন্য রয়েছে বিভিন্ন ধরনের বড় বড় রাইড এবং সুবিশাল লেক । ১২.২১২১ জায়গা জুড়ে রয়েছে এই পার্ক। এখানে বিভিন্ন ধরনের রাইট রয়েছে যেমন বাম্পার কার, বাম্পার বোর্ড, থ্রিডি মুভি থিয়েটার, প্যাটেল বোর্ড, টি কাপ, ব্যাটারি কার, হর্স রাইড, ফ্রক জাম্প‌, অক্টোপাস রাইড ইত্যাদি। আমার রেকমেন্ডেশন হল জিয়া পার্কে গেলে আপনার অবশ্যই অক্টোপাস এবং ষ্টার রাইডে উঠা উচিৎ। জিয়া পার্কের টিকিটের প্রবেশ ‌ মূল্য মাত্র ২৫ টাকা। এখানে বিভিন্ন রাইডের পাশাপাশি রয়েছে কিছু ফ্রি ফিজিক্যাল গেমস ছোটদের জন্য। তাছাড়া পুরুষ ও মহিলাদের জন্য রয়েছে আলাদাভাবে নামাজের ব্যবস্থা ওয়াশরুম এবং কার পার্কিংয়ের মত সুবিধা। শহীদ জিয়া শিশু পার্কের রাজশাহী সেরা দর্শনের স্থানসমূহের মধ্যে একটি অন্যতম বিনোদন এবং মনোরঞ্জনের স্থান বলে অভিহিত করা হয়।

রাজশাহী কলেজ

রাজশাহী কলেজে সৌন্দর্য এবং গুণাগুণ বলে শেষ করা যাবেনা। বাংলাদেশের সব থেকে সুন্দর কলেজের মধ্যে অন্যতম কলেজ হচ্ছে রাজশাহী কলেজ। রাজশাহী কলেজে রয়েছে পদ্মপুকুর। এই পদ্ম পুকুরে যখন পদ্ম ফুটে তখন সম্পূর্ণ পুকুর পদ্ম ফুলে ভরে যায়। রাজশাহী কলেজে প্রতিনিয়ত অনেক দর্শনার্থী সমাগম ঘটে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন উপলক্ষে রাজশাহী কলেজে বসে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোক্তা মেলা এবং কনসার্ট। রাজশাহী কলেজে একটি বিশাল বড় খেলার মাঠ রয়েছে। রাজশাহী কলেজের প্রতিটি বিভাগ এবং ডিপার্টমেন্ট অত্যান্ত সুন্দরভাবে সুসজ্জিত করা। রাজশাহী কলেজে বিভিন্ন ধরনের ফুল এবং ফলের গাছ রয়েছে। প্রতিটি গাছে সেই গাছের সাধারণ নাম এবং বৈজ্ঞানিক নাম লেখা থাকে। বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও উৎসবের সময় রাজশাহী কলেজকে অত্যন্ত সুন্দরভাবে সাজানো হয়। রাজশাহীতে আসলে অবশ্যই একবার হলেও রাজশাহী কলেজ ঘুরে দেখা উচিত।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

রাজশাহী শহরের গর্ব হলো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। রাজশাহীকে শিক্ষানগর বলে অভিহিত করা হয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অনেক বড় এরিয়া জুড়ে রয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে রয়েছে অনেক সুন্দর সুন্দর স্থান। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম স্থান হল টুকিটাকি চত্বর, ইবলিশ চত্বর, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেডিয়াম এবং বধ্যভূমি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইবলিশ চত্বরে বিভিন্ন ধরনের ফুড কার্ট এবং ফাস্ট ফুডের স্টল রয়েছে। টুকিটাকি চত্বরে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের খাবারের দোকান এবং হোটেল। বধ্যভূমির আশেপাশে রয়েছে অনেক সুন্দর ফুলের বাগান।

টি বাঁধ 

রাজশাহীর সেরা দর্শনীয় স্থানসমূহের মধ্যে এটি অন্যতম। রাজশাহী শহরের সবচেয়ে শান্তির জায়গা আই বাঁধ। এটি পদ্মা নদীর একটি তীর। টি বাধে ইংরেজি বর্ণমালার বড় হাতে অক্ষরটি আকৃতির একটি স্থান এবং বাকি চারিদিকে পদ্মার পানিতে ভর্তি। হ্যাপি বার্থডে আরও সুন্দর করার জন্য এবং বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত করার জন্য এখানে অনেক বসার জায়গা এবং রাতে আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি নিরাপত্তার জন্য পুলিশের টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখানে নৌকা ভ্রমণের জন্য নৌকা রয়েছে। টি বাঁধে পেয়ারা ও তেতুল মাখা অত্যন্ত জনপ্রিয়। অনেকে এখানে বন্ধু-বান্ধব, পরিবার এবং জীবনসঙ্গীকে নিয়ে ঘুরতে আসে। এখানে বিকালে বসে আপনি নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।

আই বাঁধ

এটিও পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত একটি সৌন্দর্য বর্ধিত স্থান। মূলত এটি রাজশাহী শহরকে রক্ষা করার জন্য নির্মিত করা হয়েছে এসব বাঁধ । অনেকে বৃষ্টির দিনে এখানে বিকেলের পর চলে আসে চা খেতে। চা খেতে খেতে নদীর মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করে। এটি রাজশাহী শহর থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে রাজশাহী‌ কোর্ট বাজার এলাকায় অবস্থিত।

রাজশাহীকে কেন শান্তির নগরী বলা হয়?

বাংলাদেশের মধ্যে রাজশাহী এমন একটি শহর যেখানে মানুষ অনেক রাত পর্যন্ত নির্ভয়ে এবং কোন ঝামেলা ছাড়াই চলাফেরা করতে পারে। অন্যান্য শহর গুলোর মত রাজশাহী শহরে তেমন কোন ট্রাফিক বা যানজট এর সমস্যা নেই। রাজশাহী শহর অত্যন্ত পরিষ্কার এবং পরিচ্ছন্ন সহ। এই শহরটি বিভিন্ন গাছপালা এবং বাগানে ভরপুর বলে এটিকে গ্রিন সিটি বলা হয়। রাজশাহী শহর সাধারণত আমের জন্য বিখ্যাত। রাজশাহী শহরের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান রয়েছে । রাজশাহী শহরের মানুষ অনেক নিরিবিলি এবং কোলাহলের মধ্যে জীবন কাটায়।

অন্যান্য শহরের তুলনায় রাজশাহী শহরে শব্দ দূষণ পরিমাণমূলকভাবে কম হয়। আপনি চাইলে বিকেলে নদীর ধারে একা নিরবে বসে সময় অতিবাহিত করতে পারেন। অথবা সন্ধ্যার পর মুক্তমঞ্চে বা পর্দার গার্ডেনে বন্ধু-বান্ধবের সাথে আড্ডা দিয়ে সময় পার করতে পারেন। রাত হলে রাজশাহী হয়ে ওঠে আরও সুন্দর আড্ডা মুখর পরিবেশ। সকলে তার বন্ধু বান্ধবীদের নিয়ে সুশৃংখলভাবে সময় কাটায়। রাজশাহী শহরে তেমন কোন দুর্নীতি বা সন্ত্রাসী দেখা দেয় না। অন্যান্য শহরের তুলনায় রাজশাহী শহরের রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা তেমনভাবে লক্ষ্য করা যায় না। রাজশাহী শহরের মানুষগুলো অনেক সাদাসিধা প্রকৃতির হয়। এই সব কিছু মিলিয়ে রাজশাহী শহরকে শান্তির শহর বলে অভিহিত করা হয়।

লেখক এর মন্তব্য

আমি নিজেই একজন রাজশাহীর অধিবাসী। আমি আমার জীবনকালে রাজশাহীর মত সুন্দর শহর আর কোথাও দেখিনি। রাজশাহীতে যে সে শান্তি আছে, সেই শান্তি আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। আপনি যদি কখনো রাজশাহী বেড়াতে আসেন আমার সাথে যোগাযোগ করবেন ইনশাআল্লাহ আপনাকে রাজশাহী শহরে কোন ধরনের সমস্যায় পড়তে হবে না। আমি যদি ফ্রি থাকি তাহলে আপনাকে রাজশাহী শহর ভ্রমণে সঙ্গী হতে পারি। রাজশাহী সম্পর্কে যেকোনো ধরনের তথ্য জানতে কমেন্ট সেকশনে মতামত দিন। আশা করি আপনি আমার পোস্ট পড়ে উপকৃত হয়েছে। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপনি হেবি স্পিচ ব্লগারে নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url