গুগল এডসেন্স থেকে আয় করার উপায় - গুগল এডসেন্স ইউটিউব সম্পর্কে জানুন

গুগল এডসেন্স একটি বিস্ময়কর উদ্ভাবন। গুগল এডসেন্স ব্যবহার করে অনেকেই টাকা ইনকাম করছেন। যারা গুগল এডসেন্স থেকে আয় করার উপায় জানেন না তাদের জন্যই আজকের আর্টিকেলটি। কারণ আজকের এই আর্টিকেলে গুগল এডসেন্স থেকে আয় করার উপায় সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।

ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল, ফেসবুক পেজ অথবা ব্লগার এগুলো থেকে আয় করা জন্য আপনাকে অবশ্যই গুগল এডসেন্স এর সাহায্য নিতে হবে। আর বেশিরভাগ টাকা আপনি বিজ্ঞাপন থেকে আয় করবেন। তাই এই আর্টিকেলে গুগল এডসেন্স, গুগল এডসেন্স পেমেন্ট পদ্ধতি, গুগল এডসেন্স থেকে আয় করার উপায় সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য তুলে ধরা হবে।
পেজ সূচিপত্র:

গুগল অ্যাডসেন্স কি?

গুগলের বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্ক হচ্ছে গুগল অ্যাডসেন্স। বিভিন্ন কোম্পানি টাকা দিয়ে গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে তাদের বিজ্ঞাপন অনলাইনে ছড়িয়ে দেয়। যখন কোন কোম্পানি গুগল এডসেন্স কে বিজ্ঞাপন দেখানোর জন্য টাকা দেয় তখন গুগল এডসেন্স তার নেটওয়ার্কে থাকা সকল সাইট বা ইউটিউব চ্যানেলগুলোতে সেই বিজ্ঞাপন গুলো দেখায়। এইসব ওয়েবসাইটে অথবা ইউটিউব চ্যানেলে বিজ্ঞাপন গুলো দেখানো হয় সেগুলোর মালিক একটি নির্দিষ্ট কমিশন পান।

অর্থাৎ গুগল এডসেন্স হচ্ছে অ্যাড দেখানোর একটি প্রক্রিয়া। Google দুটি ধাপের মাধ্যমে এর প্রদর্শন করে। ধাপগুলো হলো:
  • গুগল এডওয়ার্ডস
  • গুগল এডসেন্স
গুগল এডওয়ার্ডস ধাপে বিভিন্ন কোম্পানি বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করার জন্য গুগল কোম্পানিকে কে টাকা দেয়। আর , গুগল এডসেন্স ধাপে গুগল এডসেন্সের নেটওয়ার্ক এ থাকা সাইট গুলোতে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করা হয়। নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ করার পর আপনি google এডসেন্স এর সদস্য হতে পারবেন।

গুগল অ্যাডসেন্স থেকে আয় করার পায়

গুগল অ্যাডসেন্স থেকে আয় করার উপায় খুবই সিম্পল। গুগল অ্যাডসেন্স থেকে আয় করার জন্য প্রথমে আপনাকে google এডসেন্স একাউন্ট খুলতে হবে। আপনার গুগল এডসেন্স একাউন্ট এর কোড আপনার ওয়েবসাইটের হেডারের ভিতরে প্রবেশ করাতে হবে।

এর পরেই আপনার ওয়েবসাইটে গুগল অ্যাড প্রদর্শন করবে। আপনার গুগল এডসেন্স একাউন্ট এর কোড আপনার ওয়েবসাইটের হেডারের ভিতরে প্রবেশ করানোর পর google আপনার ওয়েবসাইটের ধারণা যায় ওয়েবসাইটে অ্যাড প্রদর্শন করবে। পাবলিশার হিসেবে আপনি গুগল থেকে টাকা পাবেন আপনার ওয়েবসাইটে অ্যাডের ক্লিক এর উপর।

গুগল এডসেন্স থেকে টাকা ইনকাম করার আগে EPC (earning per click) এবং CPC (cost per click) সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। বর্তমানে প্রতি অ্যাডের ক্লিকের খরচের অর্থাৎ CPC 68 ভাগ অ্যাড পাবলিশার পান। অর্থাৎ, 1 অ্যাডের CPC ১ টাকা হলে পাবলিশার প্রতি অ্যাডে EPC পাবেন ০.৬৮ টাকা। গুগল এডসেন্স থেকে আয় করার জন্য অবশ্যই আপনাকে মৌলিক কনটেন্ট ক্রিয়েটর হতে হবে।

কারণ এডসেন্স শুধু মৌলিক কনটেন্ট গুলোকে অ্যাপ্রুভ করে। এর সাথে আপনাকে SEO এর কাজ জানতে হবে। তাহলে আপনার ওয়েবসাইটে ফ্রিতে অনেক ট্রাফিক আসবে। আর যত ট্রাফিক হবে ততো অ্যাডে ক্লিক করার সম্ভাবনা বেশি হবে এবং আপনার আয় বেশি হবে।

গুগল অ্যাডসেন্স এর কাজ কি?

গুগল এডসেন্স কি? গুগল এডসেন্স এর কাজ কি? নতুন কনটেন্ট ক্রিয়েটর, ব্লগার দের এসব জানা প্রয়োজন। অ্যালফাবেট ইন কর্পোরেশনের অন্তর্ভুক্ত একটি সার্চ ইঞ্জিন হচ্ছে গুগল। এই google এ বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করার একটি প্রক্রিয়া হচ্ছে গুগল এডসেন্স।

গুগল অ্যাডসেন্স এর কাজ কি না জানলে আমরা বুঝব কিভাবে যে
গুগল এডসেন্স খাই, নাকি মাথায় দেয়!? তাহলে চলুন না দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক যে গুগল অ্যাডসেন্স এর কাজ কি :
  • বিভিন্ন কোম্পানি থেকে তাদের বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের জন্য অর্থ গ্রহণ করা।
  • Google এডসেন্সের সদস্যদের পেইজ, ওয়েবসাইট অথবা চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করা
  • গুগল এডসেন্স নেটওয়ার্কের সদস্যদের কমিশন দেওয়া
পেজ, ওয়েবসাইট অথবা চ্যানেল এর ধরন অনুযায়ী বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করা। 

কিভাবে গুগল এডসেন্স একাউন্ট খুলব?

যারা নতুন ওয়েবসাইটে অথবা ইউটিউব চ্যানেল খুলেছেন তারা অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন যে কিভাবে গুগল এডসেন্স একাউন্ট খুলব? গুগল এডসেন্স একাউন্ট খোলা খুবই সহজ । আপনাকে শুধু সব সঠিক ভাবে এবং আসল তথ্য দিয়ে একাউন্ট খুলতে হবে।

গুগলের সব কিছুই ইমেইল নির্ভর। তাই অ্যাডসেন্স একাউন্ট টাও আপনাকে ইমেইল দিয়েই খুলতে হবে। আপনার gmail একাউন্টে লগইন করে গুগল এডসেন্সের ওয়েবসাইটে গিয়ে সাইন আপ অপশনে ক্লিক করতে হবে। এরপর আপনার সামনে একটি ফরম আসবে। এই ফ্রম টি পূরণ করে গুগল এডসেন্স একাউন্টের জন্য আবেদন করতে হবে। যেভাবে গুগল এডসেন্স একাউন্ট খুলবেন:
  • ২ স্টেপ ভেরিফিকেশন এর মাধ্যমে লক করা ইমেইল আইডি দিয়ে গুগল এডসেন্স একাউন্ট এ সাইন আপ এবং লগইন করতে হবে।
  • আপনার ব্যক্তিগত একাউন্ট হলে
  • Individual একাউন্ট আর কোন কোম্পানির অ্যাকাউন্ট হলে company সিলেক্ট করতে হবে।
  • এন আই ডি কার্ড দিয়ে থাকা নাম এবং ব্যবহৃত সিম নাম্বার লাগবে।
  • আপনার বর্তমান ঠিকানা দিতে হবে
  • আপনার বিজ্ঞাপন দেখানোর পেজ, YouTube চ্যানেল অথবা ওয়েবসাইট লিংক অ্যাড করতে হবে।
  • বাংলাদেশের টাইম জোন সেট করে দিতে হবে।
ফরম পূরণ করে সাবমিট করার পর 1 থেকে 15 দিনের মধ্যে রেজাল্ট আসবে। আপনার একাউন্ট google এডসেন্সের জন্য সিলেক্ট হলো কিনা আপনাকে ইমেল এর মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।

গুগল এডসেন্স পেমেন্ট

গুগল এডসেন্সের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময়ের পর আপনি পেমেন্ট পাবেন। গুগল এডসেন্স এর মাধ্যমে আয় অনেকে করা শুরু করলেও তারা গুগল এডসেন্স পেমেন্ট মেথড সম্পর্কে জানে না। গুগল এডসেন্স পেমেন্ট মেথড একদম পানির মত সহজ।

গুগল এডসেন্স পেমেন্ট পাওয়ার আগে আপনার ইনকাম ১০০ ডলার হতে হবে। ১০০ ডলার না হওয়া পর্যন্ত আপনি পেমেন্ট পাবেন না। যখন গুগল এডসেন্সের জন্য একাউন্ট খুলবেন এবং সকল তথ্য সঠিক দিতে হবে। অ্যাকাউন্ট খোলার সময় পেমেন্ট মেথড হিসেবে ব্যাংক একাউন্ট যোগ করতে হবে। 

আপনি চাইলে আপনার ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট যোগ করতে পারেন। এডসেন্স অ্যাকাউন্ট খোলার পর আপনার ইনকাম যখন ১০ ডলার হবে তখন আপনার দেওয়া ঠিকানায় একটি পিন নাম্বার যাবে এই পিন নাম্বারটি একটি ভেরিফিকেশন কোড। প্রতিমাসে ২১ থেকে ২৬ তারিখের মধ্যে আপনার পেমেন্ট করা হবে।

পেমেন্ট পাওয়ার পর ব্যাংকের ৩-৭ কার্যদিবসের মধ্যে আপনার ব্যাংক একাউন্টে টাকা চলে আসবে। আপনি চাইলে আপনার একাউন্ট থেকে পেমেন্টের লোকেশন চেক করতে পারেন। অনেকের স্বপ্ন ইউটিউব চ্যানেল খুলবে, বড় ইউটিউবার হবে এবং ইউটিউব থেকে আয় করবে।

YouTube চ্যানেল খোলার আগে প্রয়োজন সুন্দর ইউটিউব চ্যানেলের নাম। আর ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয় করার জন্য গুগল এডসেন্স ইউটিউব সম্পর্কে জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। তাই আজকে আমরা গুগল এডসেন্স ইউটিউব - সুন্দর ইউটিউব চ্যানেল নাম সম্পর্কে জানবো।

গুগল এডসেন্স ইউটিউব

গুগল এডসেন্স ইউটিউব অর্থ হচ্ছে গুগল এডসেন্স ব্যবহার করে ইউটিউব চ্যানেল থেকে অর্থ উপার্জন করা। এর জন্য প্রয়োজনীয় প্রথমে আপনাকে একটি গুগল এডসেন্স ইউটিউব একাউন্ট খুলতে হবে। ইউটিউব স্টুডিও তে গেলেই আপনি এডসেন্স একাউন্ট খোলার অপশন পেয়ে যাবেন। এরপর আপনার আবেদন গৃহীত হওয়ার পর, আপনাকে অ্যাডসেন্স একাউন্ট ইউটিউবের সাথে লিঙ্ক করতে হবে।

আর আগে থেকেই গুগল এডসেন্স একাউন্ট থাকলে সেটি ইউটিউব চ্যানেলের সাথে লিংক করতে হবে। গুগল এডসেন্স একাউন্ট ইউটিউবের সাথে লিঙ্ক করার পর আপনাকে কিছু শর্ত মেনে চলতে হবে। একই প্রাপকের নামে একাধিক ইউটিউব চ্যানেল থাকলে প্রথম চ্যানেলের মনিটাইজেশন অফ করে দেওয়া হবে।

সুন্দর ইউটিউব চ্যানেল নাম

ইউটিউব চ্যানেলের নাম যত আকর্ষণীয় ও সুন্দর হবে দর্শক তত আগ্রহ নিয়ে আপনার ভিডিও দেখবে। Youtube চ্যানেলের মালিকের চাইতে ইউটিউব চ্যানেলের নাম বেশি জনপ্রিয়তা পায়। তাই সুন্দর ইউটিউব চ্যানেল নাম এর জরুরি।

চলুন কিছু সুন্দর ইউটিউব চ্যানেল নাম সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক:
  • নীল আলো
  • অজানা প্রহর
  • ব্ল্যাক আলফা
  • আলোচনা-সমালোচনা
  • প্রযুক্তির বাজিমাত
  • পর্দার আড়ালে
  • অজানা পৃথিবী
  • নীলাম্বরী
  • Tech for take
  • তুমি কে?

ইউটিউব কখন অর্থ প্রদান করে - কতদিন পর অর্থ প্রদান করে?

ইউটিউব আপনাকে তখনই অর্থ প্রদান করবে যখন আপনার মাধ্যমে ইউটিউবের আর্থিক লাভ হবে। Youtube থেকে অর্থ উপার্জনের জন্য ইউটিউব চ্যানেলে গুগল এডসেন্স প্রোগ্রাম চালু করতে হবে। গুগল এডসেন্স প্রোগ্রাম চালু করার জন্য আপনার ইউটিউব চ্যানেলে ১০০০ সাবস্ক্রাইবার ও ৩৬৫ দিনে ৪০০০ মিনিট ওয়াচিং টাইম থাকতে হবে।

অন্যথায় আপনি গুগল এডসেন্স প্রোগ্রাম চালু করার জন্য আবেদন করতে পারবেন না। আপনার আবেদন গৃহীত হওয়ার পর google আপনার ভিডিওতে অ্যাড চালনা করবে। যার মাধ্যমেই আপনি অর্থ উপার্জন করবেন ।

এর থেকে অর্থ পাওয়া যে পাওয়া যায় তার ৫৫% ইউটিউব আপনাকে দিবে এবং ৪৫% ইউটিউব কোম্পানির। আপনার ইনকাম যখন ১০০ ডলারের উপরে হবে তখন ইউটিউব আপনাকে অর্থ প্রদান করবে। এখন 100 ডলার আয় করতে আপনার কতদিন লাগছে সেটা নির্ভর করবে আপনারা আপলোডকৃত ভিডিও ভিউজ, ভিডিওতে কোন ধরনের অ্যাড দেখানো হচ্ছে এসবের উপর।

ইউটিউব আপনাকে প্রতি মাসে কখন অর্থ প্রদান করে?

ইউটিউবে যাদের চ্যানেলে মনিটাইজেশন অন আছে তারা সাধারণত প্রতিমাসে একবার ইউটিউব থেকে পেমেন্ট পায়। ইউটিউবে আপনার ইনকাম যখন ১০০ ডলারের উপরে হবে তখন আপনাকে পেমেন্ট প্রদান করা হবে। ইউটিউব পেমেন্টের মোট তিনটি ধাপ রয়েছে।

প্রথম ধাপে গুগল এডসেন্স থেকে টাকা আপনার YouTube একাউন্টে আসে তারপর দ্বিতীয় ধাপে YouTube একাউন্ট থেকে ঢাকা আপনার ব্যাংক একাউন্টে আসে। সর্বশেষ আপনার পেমেন্টটি ডলার থেকে তাকাতে কনভার্ট করা হয় এবং আপনাকে জানানো হয় যে আপনার পেমেন্ট সম্পন্ন হয়েছে । অর্থাৎ ইউটিউব আপনাকে প্রতি মাসের ৩০-৩১ তারিখের মধ্যে অর্থ প্রদান করে।

প্রতি মাসে ১০ থেকে ১৫ তারিখের মধ্যে google এডসেন্স থেকে আপনার একাউন্টে জমা হয়। এরপর ২১ তারিখের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে আপনার পেমেন্ট পাঠানো হয়। ২১ তারিখ থেকে ৩০ তারিখের মধ্যে আপনি যে ব্যাংক একাউন্ট অ্যাড করেছিলেন সেই একাউন্টে টাকা আসে।

YouTube-এ $1000 করতে কতক্ষণ লাগে?

আপনার চ্যানেলে মনিটাইজেশন অন আছে এবং আপনার ইউটিউব থেকে আপনার একাউন্টে ডলার জমা হওয়া শুরু হয়েছে। আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে YouTube-এ $1000 উপার্জন করতে কতক্ষণ লাগে? এটির নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই।

এক হাজার ডলার উপার্জন করতে কত সময় লাগবে এটি আপনার চ্যানেলের বিষয়বস্ত, জনপ্রিয়তা, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, দর্শকদের এনগেজমেন্ট এসবের ওপর নির্ভর করছে। আবার YouTube-এ $1000 উপার্জন করতে কতক্ষণ লাগে এটি CPM (Cost per Mille) এর উপর নির্ভর করে, যেটি অঞ্চলভেদে আলাদা হয়। নীতি অনুযায়ী YouTube-এ $1000 করতে কতক্ষণ লাগে সেটার নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই, সম্পূর্ণ আপনার উপর নির্ভরশীল

ইউটিউব প্রতি 1000 ভিউতে কত টাকা দেয়?

ইউটিউব প্রতি 1000 ভিউতে কত টাকা দেয় নির্দিষ্টি ভাবে বলা মুশকিল। কারণ বিভিন্ন চ্যানেল বিভিন্ন রকম আয় হয়। টেক, ফাইন্যান্স এসব বিষয় সম্পর্কিত চ্যানেলে আয় বেশি হয় আবার ফুড ব্লগিং বিনোদন এসব চ্যানেলে তুলনামূলক আয় কম হয়। ইউটিউব প্রতি 1000 ভিউতে কত টাকা দেয় এটি CPM (Cost per Mille) এর উপর নির্ভর করে, যেটি অঞ্চলভেদে আলাদা হয়।

কানাডা আমেরিকা এসব দেশের ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিওতে ১০০০ ভিউতে যে টাকা হবে, বাংলাদেশ-ভারত এসব দেশের ১০০০ ভিউতে তার থেকে কম টাকা হবে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে CPM রেট 1-5 ডলার হলে প্রতি ১০০০ ভিউতে আপনি 1-10 ডলার ইনকাম করবেন।

যখন YouTube আমাকে অর্থ প্রদান করে তখন আমি কীভাবে জানব ?

Youtube চ্যানেল থেকে অর্থ উপার্জন শুরু হওয়ার পর অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে যে যখন YouTube আমাকে অর্থ প্রদান করে তখন আমি কীভাবে জানব? Youtube আপনাকে অর্থ প্রদান করার পর বিভিন্নভাবে জানতে পারবেন।
ইমেইল নোটিফিকেশন:
গুগল এডসেন্স অথবা ইউটিউব থেকে আপনাকে অর্থ প্রধান সংক্রান্ত ইমেইল পাঠানো হবে। আপনি youtube এর অর্থ প্রদান সম্পর্কে জানতে পারবেন।
গুগল এডসেন্স একাউন্ট
গুগল এডসেন্স একাউন্টে লগইন করার পর আপনি আপনার অর্থ সংক্রান্ত সকল তথ্য পেয়ে যাবেন।
ইউটিউব স্টুডিও
Youtube স্টুডিওর মনিটাইজেশন এ ক্লিক করলে আপনি অর্থ সংক্রান্ত সকল তথ্য পাবেন।
ব্যাংক একাউন্ট চেক
ব্যাংক একাউন্ট চেক করলে আপনার অর্থ প্রদান করা হয়েছে কিনা আপনি সেটা জানতে পারবেন।
উপরোক্ত নিয়মে যখন YouTube আপনাকে অর্থ প্রদান করে তখন আপনি জানতে পারবেন।

১ মিলিয়ন ভিউয়ের জন্য YouTube কত টাকা দেয়?

1 মিলিয়ন ভিউয়ের জন্য YouTube সাধারণত 500-5000 ডলার দেয়, তবে এই মান নির্দিষ্ট নয়। অনেক ফ্যাক্টরের ওপর এর মানের কম বেশি নির্ভর করছে। 1 মিলিয়ন ভিউয়ের জন্য YouTube কত টাকা দেয়-এটি আপনার চ্যানেলের বিষয়বস্তু, জনপ্রিয়তা, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, দর্শকদের এনগেজমেন্ট এসবের ওপর নির্ভর করছে।

যেসব দেশের CPM রেট বেশি সেসব দেশের এক মিলিয়ন ভিউতে বেশি টাকা পাওয়া যায়। টেক, ফাইন্যান্স, লাইফ স্টাইল এসব বিষয় সম্পর্কিত চ্যানেলে আয় বেশি হয়। অর্থাৎ, 1 মিলিয়ন ভিউয়ের জন্য YouTube কত টাকা দেয় এর নির্দিষ্ট কোনো সীমা নেই।

YouTube এ ৩ মিনিটের ভিডিও থেকে কি ইনকাম হয়?

হ্যাঁ, YouTube এ 3 মিনিটের ভিডিও অর্থোপার্জন করে। তবে ভিডিওর দৈর্ঘ্য ছোট হওয়ায় উপার্জিত অর্থের পরিমাণও কম হয়। বড় দৈর্ঘ্যের ভিডিওতে মিডিল অ্যাড দেখানো যায় কিন্তু ছোট ভিডিওগুলোতে সেটি সম্ভব হয় না। তবে ছোটদের ভিডিওতে ইন্ট্রো অ্যাড অথবা আউটড্রো এড দেখানো যায়, যার ফলে কম হলেও কিছুটা ভালো পরিমাণ অর্থ পাওয়া যায়।

টেক, ফাইন্যান্স, শিক্ষা এসব সম্পর্কিত ভিডিওতে আয় বেশি হয়। উচ্চ আয়ের দেশগুলোর দর্শক ভিডিও দেখলে ভিডিওতে আয় বেশি হয়। অর্থাৎ আপনার ভিডিওর দৈর্ঘ্য ছোট অথবা বড় হোক না কেন আপনার ভিডিওতে এড দেখানো হলে তবেই আপনি আয় করতে পারবেন।

YouTube শর্টস জন্য এর জন্য ইউটিউব অর্থ প্রদান করে?

হ্যাঁ, YouTube শর্টস জন্য অর্থ প্রদান করে। ইউটিউব অথরিটি YouTube shorts fund নামক একটি ফান্ড খুলেছে। এই ফান্ড যোগ্য ইউটিউব কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের অর্থ প্রদান করে। YouTube shorts থেকে অর্থ আয়ের জন্য ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রামের সাথে যুক্ত থাকতে হবে এবং শর্টস এ নির্দিষ্ট সংখ্যক ভিউ থাকতে হবে।

এছাড়াও YouTube shorts থেকে বেশি পরিমাণ অর্থ আয়ের জন্য বিভিন্ন কোম্পানির সাথে পার্টনারশিপ, স্পনসরশিপ, এফিলিয়েট মার্কেটিং করা যেতে পারে।

ইউটিউব কি প্রতি 1000 ভিউতে 1 ডলার দেয়?

সাধারণত প্রতি 1000 ভিউতে ইউটিউব এক ডলার বা তার বেশি দিয়ে থাকে। কারণ বিভিন্ন চ্যানেল বিভিন্ন রকম আয় হয়। টেক, ফাইন্যান্স এসব বিষয় সম্পর্কিত চ্যানেলে আয় বেশি হয় আবার ফুড ব্লগিং বিনোদন এসব চ্যানেলে তুলনামূলক আয় কম হয়। ইউটিউব প্রতি 1000 ভিউতে কত টাকা দেয় এটি CPM (Cost per Mille) এর উপর নির্ভর করে, যেটি অঞ্চলভেদে আলাদা হয়।

কানাডা আমেরিকা এসব দেশের ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিওতে ১০০০ ভিউতে যে টাকা হবে, বাংলাদেশ-ভারত এসব দেশের ১০০০ ভিউতে তার থেকে কম টাকা হবে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে CPM রেট 1-5 ডলার হলে প্রতি ১০০০ ভিউতে আপনি 1-10 ডলার ইনকাম করবেন। অর্থাৎ আপনি ১০০০ ভিউতে এক ডলার পাবেন।

ইউটিউব কিভাবে টাকা দেই?

Youtube বিভিন্নভাবে কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের টাকা দেয়। সেটা হতে পারে এড রেভিনিউ, ইউটিউব শর্টস ফান্ড, প্রিমিয়াম সাবস্ক্রাইবারদের অর্থ। আপনার ইউটিউব চ্যানেলে মনিটাইজেশন অন থাকলে আপনাকে ইউটিউব টাকা দিবে কারণ আপনার ভিডিওতে এড দেখানোর মাধ্যমে ইউটিউব অর্থ পায়।

আপনার YouTube শর্টস এ নির্দিষ্ট পরিমাণ ভিউ থাকলে ইউটিউব আপনাকে টাকা দিবে। এই টাকাগুলো আপনার ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে আপনার হাতে পাবেন। এজন্য আপনাকে ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রাম সাথে যুক্ত থাকতে হবে।

ইউটিউব পেমেন্ট করতে কয়দিন সময় লাগে?

ইউটিউব আপনাকে তখনই পেমেন্ট করবে তখন আপনার আয় ১০০ ডলারের উপরে হবে। আপনার চ্যানেলে মনিটাইজেশন অন থাকতে হবে এবং ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রামের সাথে যুক্ত থাকতে হবে। তাহলে গুগল এডসেন্স এর মাধ্যমে আপনি অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

এর অর্থ অনেক প্রসেসের মাধ্যমে আপনার ব্যাংক একাউন্টে এসে পৌঁছাবে। প্রতি মাসের ৩০ থেকে ৩১ তারিখের মধ্যে আপনার পেমেন্ট আপনার ব্যাংক একাউন্টে পৌঁছে দেয়। ক্ষেত্রবিশেষে দেরি হতে পারে তবে এক্ষেত্রে চিন্তার কিছু নেই।

আপনার ভিডিওর বিষয়, ভিডিওতে এড রেভিনিউ এবং ভিউ যত হবে আপনি ততো তাড়াতাড়ি youtube থেকে অর্থ পাবেন। ইউটিউব পেমেন্টের তিনটি ধাপ রয়েছে এবং টাকাটা যেহেতু বহির্বিশ্ব থেকে আসে তাই ইউটিউব পেমেন্ট পেতে সময় লাগে।

FAQs: গুগল এডসেন্স নিয়ে কিছু সাধারণ প্রশ্ন

১) প্রশ্ন: গুগল এডসেন্স অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে কতদিন লাগে?
উত্তর: গুগল এডসেন্স অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে কয়েকদিন থেকে কয়েক সপ্তাহ লেগে যেতে পারে।

২) প্রশ্ন: গুগল এডসেন্স একাউন্ট তৈরি করার পূর্ব শর্ত কি?
উত্তর: গুগল এডসেন্স একাউন্ট তৈরি করার পূর্ব শর্ত হচ্ছে আপনার ওয়েবসাইটে, চ্যানেলে, পেইজে মানসম্মত কনটেন্ট থাকতে হবে।

৩) প্রশ্ন: গুগল এডসেন্স থেকে কত টাকা ইনকাম করা যায়?
উত্তর: কত টাকা ইনকাম করা যাবে এটি আপনার লোকেশন, আপনার ওয়েবসাইটে প্রদর্শিত বিজ্ঞাপন, ওয়েবসাইটের ট্রাফিক, দর্শকের লোকেশন এসবের উপর নির্ভরশীল।

৪) প্রশ্ন:কোন ভাষায় ভিডিও তৈরি করলে আয় বেশি হবে?
উত্তর: ইংরেজি ভাষায় ভিডিও তৈরি করলে আয় বেশি হবে। কারণ এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক দর্শকরা আপনার ভিডিওটি দেখতে পারবে।

৫) প্রশ্ন: কোন বিষয়ের উপর ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করা উত্তম?
উত্তর: প্রযুক্তি ফাইন্যান্স শিক্ষা লাইফ স্টাইল এসব বিষয়ে ভিডিও তৈরি করা উত্তম। কারণ এসব বিষয় মানুষদের আগ্রহ বেশি

লেখক এর শেষ কথা

আজকে আপনি গুগল এডসেন্স থেকে আয় করার উপায় সম্পর্কে জানলেন। আশা রাখি আপনি অনেক উপকৃত হয়েছেন। একজন কন্টেন্ট ক্রিয়েটরের গুগল এডসেন্স থেকে আয় করার উপায় আবশ্যক। কারণ ইউটিউব চ্যানেল ওয়েবসাইট অথবা ফেসবুক পেজ এ সকল কিছুর থেকে আয় করা গুগল এডসেন্সের উপর নির্ভরশীল।

অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি এই পোস্টে গুগল এডসেন্স ইউটিউব উল্লেখ করা হয়েছে। ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয় করার জন্য গুগল এডসেন্স ইউটিউব সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। আর ইউটিউব চ্যানেলের নাম যদি সুন্দর হয় তাহলে দর্শকরা তো আর আকর্ষিত হবে। সুন্দর ইউটিউব চ্যানেল নাম সম্পর্কে জেনে আশা রাখছি আপনার উপকৃত হয়েছেন।

আর্টিকেলটি ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে আমাদের পাশেই থাকবেন। আর কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট বক্সে জানান। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপনি হেবি স্পিচ ব্লগারে নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url